এক্স_গার্লফ্রেন্ড_যখন_বেয়াইন

 এক্স_গার্লফ্রেন্ড_যখন_বেয়াইন 


.


জান্নাত-- তুমি তো এখন আমায় ভালোই বাসনা তাই তো কথা বলছো না আমার সাথে। ঠিক আছে তোমার আর আমার সাথে কথা বলতে হবে না। আমি আর এখানে পরে থাকবো না চলে যাবো আজি আর এক্ষুনি।

জান্নাত কথাটা বলে যেই অন্য দিকে ঘুরবে অমনি ওর হাতটা ধরে একটানে আমার বুকের ওপর এনে ফেল্লাম,,,,,

আমি-- খুব সাহস হয়েছে তোর তাই না। আমাকে ইগনোর করেছিস এত দিন। এখন আবার আমাকে ছেড়ে চলে যাবি তাই না। আমাকে না জানিয়ে এক পা বাড়ির বাইরে বের হলে পা ভেঙে হাতে ধরিয়ে দেবো।

তুই জানিস তোর সাথে যখন আমি কথা বলতে যেতাম আর তুই আমাকে এরিয়ে চলতি তখন আমার কত টা কষ্ট হতো। মনে হতো নিজেকে শেষ করে দেই। কিন্তু যখন আম্মু আব্বু ভাইয়ার কথা মনে হতো তখন আর কিছুই করতে পারতাম না। আবার মনে হতো তুই যদি আবার আমার কাছে ফিরে আছিস আর আমাকে যদি না পাস তখন তো তুই কষ্ট পাবি। আমি যে তোকে কষ্ট দিতে পারতাম নারে পাগলি। আমি যে তোকে অনেক ভালোবাসি রে। কেমনে থাকতাম তোকে ছাড়া বল?(কান্না মাখা কন্ঠে)

কথা গুলো বলে জান্নাত এর দিকে তাকিয়ে দেখি মেয়েটা আমার বুকের মধ্যে মুখ লুকিয়ে কান্না করছে। একটু বেশিই বলে ফেললাম নাকি?☺

তাই আবার মজা করে বললাম,,,,,,

আমি-- তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাবে তাইনা জান্নাত? ওকে যা-ও। তোমাকে ছাড়া তো ৩টা মাস থেকেই আছি। আর বাকি জীবন টা না হয় তোমার শ্রিতি নিয়েই বেচে থাকবো। আর আমারও অভ্যাস হয়ে গেছে তোমাকে ছাড়া থাকতে থাকতে। যা-ও তুমি লাগবে না তোমাকে আমার।

কথা টা বলতেই জান্নাত আমাকে আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরে হাউমাউ করে কান্না করে দিলো।

জান্নাত-- আমাকে তারিয়ে দিবে আজিজ? এইবার আমি তোমার থেকে আলাদা হলে মনে হয় আর বাঁচব না আজিজ। আমি সত্যি সত্যি মরে যাবো। তুমি জানো আজিজ তোমাকে যখন এরিয়ে চলতাম নিজের ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও। তোমার থেকে যখন দুরে দুরে থাকতাম তখন আমার কত টা কষ্ট হতো। মনে হতো আমার বুকের মধ্যে থেকে কেউ যেনো আমার কলিজা টা বের করে নিচ্ছে। তারপরও তোমার থেকে দুরে থাকতাম তোমার ভালোর জন্য আমাদের ভালোর জন্য। আমাকে তারিয়ে দিয়ো না আজিজ আমি যে তোমাকে ছাড়া বাচবনা।

জান্নাত এর গায়ে যতটা সম্ভব শক্তি আছে সব শক্তি দিয়ে আমাকে জরিয়ে ধরে কথা গুলো বললো।

আমি-- তুমিই তো বললে আমার কাছে থাকবে না চলে যাবে।

জান্নাত-- সে-তো তুমি আমার সাথে কথা বলছিলে না তার জন্য বললাম। আচ্ছা ঠিক আছে আমি যদি কখনো তোমাকে ছেড়ে চলে যেতে চাই তাহলে তুমি আমার হাত পা ভেঙে দিয়ো কেমন। তাও আমাকে তোমার কাছে থেকে যেতে দিবেনা।

আমি-- ইশশ শখ কত,,, আমার এত সুন্দর বউটার নাকি হাত পা ভেঙে দিবো। তখন তোমাকে কেমন কেমন দেখাবে না? আর লোকে তখন আমাকে কি বলবে? বলবে দেখ আজিজ এর বউটাকে কেমন দেখা যায় একদম পেত্নী।😁

জান্নাত-- বললে বলুক তাতে আমার কি। সেটা তো আর আমাকে বলবে না তোমাকেই বলবে।☺ আর তার জন্যেও যদি আমাদের কে কেউ আলাদা না করতে পারে তাহলে আমার হাত পা ভাঙতে কোনো সমস্যাই নাই☺

আমি-- আমাদের কে এমনিতেই কেউ আলাদা করতে পারবে নারে পাগলি। সে শক্তি কারো আছে নাকি আল্লাহ তায়ালা বাদে৷। আর যে আলাদা করতে আসবে আমি তারি হাত পা ভেঙে দিবো না।😜😍 ( গায়ে সব শক্তি এক করে মেয়ে টাকে বুকের মধ্যে জরিয়ে নিয়ে)

জান্নাত-- হুম😚 আমিও ভেঙে দিবো হি হি হি☺

আমি-- ঠিক আছে দিয়ো☺

জান্নাত-- হুম

আমি-- এই বউ আমার কিন্তু অনেক খুদা লেগেছে।

জান্নাত-- হুম তোমার জন্য তো খাবার এনে রেখেছি। টেবিলে আছে খেয়ে নাও।

আমি-- নাহ থাক খাবো না।😒

জান্নাত-- খাবে না কেনো? এইতো বললে তোমার নাকি অনেক খুদা লেগেছে?

আমি-- হুম লেগেছে তো।

জান্নাত-- তবে খাবে না কেনো?😏

আমি-- কেউ একজন যদি খাইয়ে দিতো তাহলে খাইতাম।😒

জান্নাত-- তো সেই কেউ একজন তোমাকে না করছে যে সে খাইয়ে দেবে না☺। বললেই তো হয় তুমি আমার হাতে খাবে।

আমি-- সেই কেউ একজন কি বোঝে না তারও তার বউ এর হাতে খেতে ইচ্ছে করে।

জান্নাত-- হয়েছে হয়েছে আর নেকামি করতে হবে না। আসো খাইয়ে দেই আমার বর টাকে😍

তারপর জান্নাত আমাকে খাইয়ে দিতে লাগলো আর আমি খাইতে লাগলাম। উফফ ভাই জানেন না বউ এর হাতে খেতে কতটা মজা। যে বউ এর হাতে খাবার খায় সেই শুধু জানে এর হাতের খাবার একদম যেনো অমৃত। ( দুঃখের বিষয় আমি এখনো ছোট্ট বাচ্চা একটা ছেলে সবে Ssc দিলাম বিয়ে করাতো দুরের কথা বউ পামু কউ😭)

জান্নাত আমাকে খাইয়ে দিতেছে আর আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। তার তাকিয়ে থাকা দেখে বুঝতে পারলাম ওরও অনেক খুদা লেগেছে। মেয়েটাও তো সারাদিন কিছু খায়নি। তাই আমিও এক লোকমা খাবার নিয়ে জান্নাত এর মুখের কাছে ধরলাম। সাথে সাথে মেয়েটা খাবার মুখে নিয়ে নিলো। যেনো সে এই অপেক্ষা তেই ছিলো আমি কখন তাকে খাবার খাইয়ে দেই।

খাবার মুখে নিতেই জান্নাত এর চোখ দিয়ে পানি গরিয়ে পড়লো। এটা কোনো দুঃখের পানি দেখলাম না এটা যেনো রাজ্য জয়ের আনন্দের চোখের পানি।

সবার বউই চায় তার স্বামী তাকে একটু কেয়ার করবে একটু ভালোবাসবে। খাবার সময় আবদার করে বর তার বউকে বলবে তুমি আমাকে খাইয়ে না দিলে আমি খাবই না। বউ যখন তার স্বামী কে খাইয়ে দেবে তার স্বামীও তখন তার বউ কে খাইয়ে দেবে। এতটুকুই। বউ দের তখন আর কিছুই যেনো চাই না। এতেই নিজেকে যেনো রাণী মনে করেন। 

কথা গুলো ভাবতে ভাবতে আমাদের খাওয়া শেষ। তারপর,,,,,,,,,, 

আমার ফোনটা বেজে উঠল।

আমি-- বউ

জান্নাত-- উহ

আমি-- ও বউ

জান্নাত-- কিহ?

আমি-- আমার ফোন টা একটু এনে দাও না গো টেবিলের ওপর থেকে।

জান্নাত-- পারবো না, নিজের টা নিজেই নিয়ে নাও।

আমি-- বাব্বাহ। থাক তোমার আনতে হবে না আমি নিয়ে নেই। 

ফোন টা হাতে নিয়ে দেখি অচে না নাম্বার। 

ধরার পড়ে,,,,,,

আমি-- হ্যালো আসসালামু আলাইকুম কে বলছেন?

-- ভাইয়া আমি রাফি বলছিলাম আপনার কলেজের ছোট ভাই।

আমি-- ওহ রাফি! হুম ভাই বল?

রাফি-- ভাইয়া আপনাদের তো কাল কেই ফর্ম ফিলাবের লাস্ট ডেট।

আমি-- ওহ হে তাই তো। ধন্যবাদ ভাই আমার তো মনেই ছিলো না।

রাফি-- আরে ভাই ধন্যবাদ দেবার কি আছে। আমি রাখি তাহলে কাল দেখা হবে।

জান্নাত-- কে ফোন দিয়েছিল গো?

আমি-- রাফি কলেজ এর ছোট ভাই। কাল একবার কলেজে যেতে হবে। ফর্ম পুরণ করতে হবে।

জান্নাত-- ওহ তাহলে আর দেরি করনা।

আমি-- হুম।

**পরের দিন**

সকাল ৭ টা

জান্নাত এর কপালে চুমু একে দিয়ে ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। 

কলেজের ভিতরে ডুকতেই আমার চোখ কপালে উঠে গেলো। 

একি এই মেয়ে টা এখানে কি করে? আর এরা কারা?

চলবে,,,,,,,?

বিঃদ্রঃ ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

গল্প টা আরো এগিয়ে নিয়ে যাবো নাকি ইতি টেনে দিবো জানাবেন।

Post a Comment

0 Comments