The Masseg of islamআল্লাহ যেসব কারণে মানুষের অন্তর থেকে নূর উঠিয়ে নিয়ে যান

 



আল্লাহ যেসব কারণে মানুষের অন্তর থেকে নূর উঠিয়ে নিয়ে যান - 


১. অবৈধ সম্পর্কঃ কমপ্লিট ডাস্টবিন এইটা। বিয়ের আগে-পরে যেকোন অবৈধ সম্পর্কে থাকাকালীন কোন দুআ কবুল হয় না। কোন আত্মিক উন্নতি হয় না। আল্লাহর রহমত উঠে যায়। শুধু পেরেশানি ছাড়া রহমতের ছিঁটেফোঁটাও থাকে না। আল্লাহ থেকে হিদায়াত চেয়ে না নিলে এটা থেকে বের হওয়া অসম্ভব। তওবা করে বের হতে না পারলে দ্বীন-দুনিয়ার ঘাঁটে ঘাঁটে কষ্ট আর বেইজ্জতি।


২. অশ্লীল দৃশ্যঃ এটা এমন এক মাদক যার কারণে কারো দিকে সম্মানের দৃষ্টিতে তাকানোর বদলে ভোগের দৃষ্টিতে তাকানো অভ্যেস হয়ে যায়। শারীরিক-মানসিক-আর্থিক-চারিত্রিক সকলভাবে শেষ করে দেয়। 


৩. মিউজিকঃ গান-বাজনা অন্তরে মুনাফিকী সৃষ্টি করে। হতাশা সৃষ্টি করে। দেখা যায় প্রায় সকল মিউজিশিয়ান মাদকাসক্ত। 


৪. মুভি-সিরিজঃ বেপর্দা নারী, অশ্লীল দৃশ্যের ছড়াছড়ি। তথাকথিত ইসলামিক মুভি গুলোতেও এখন নারীদৃশ্যের ছড়াছড়ি। হালাল মুভি বলতে কিছুই নাই। চোখের যিনার উপকরণ সবকিছু। 


৫. টিভিঃ একটু দেশের খবর নিবেন ভাবছেন, টিভি খুললেন। প্রতিটা চ্যানেলের দেখেন কি অবস্থা। বেপর্দা নারী দিয়ে ভরিয়ে রেখেছে। সংবাদ পাঠ থেকে শুরু টিভির সকল এ্যাডে বেপর্দা-সস্তা নারীকে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। এমনকি খেলা পর্যন্ত দেখা যায় না। ক্যামেরা গুলো শুধু ঐ বেপর্দা নারীর দিকেই তাক করানো থাকে। চোখের যিনার কথা মাথায় থাকলে টিভির দিকে তাকাতেও পারবেন নাহ। 


৬. ফ্রি-মিক্সিংঃ সবজায়গায় ছেলে-মেয়ে ফ্রি মিক্সিং। অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়াটা খুবই সহজ। নোট শেয়ারের নাম দিয়ে সেই যে ম্যাসেজিং শুরু আর থামায় কে? গুনাহর সাগরে ডুবে যাওয়া অনেক সহজ রেহ এখন ভাই। 


৭. সঙ্কীর্ণ জীবনঃ সূরা ত্ব-হা তে আল্লাহ বলেছেন কেউ আল্লাহ থেকে দূরে চলে গেলে আল্লাহ তার জীবনকে একেবারে সঙ্কীর্ণ করে দেবেন।সব থেকেও মনে হবে কোথাও কি যেন নেই। হতাশা তাকে ঘিরে রাখবে। তার সফলতাও তার থেকে বহুদূরে চলে যাবে। অন্তরের নূর তো সেই কবেই চলে যাবে রে ভাই। 


তাহলে উপায় কি? 

- রিপ্লেইসমেন্ট। আল্লাহ হারাম সবকিছুর হালাল রিপ্লেইসমেন্ট দিয়েছেন। 


"তোমরা যা নিজেরা করো না তা কখনো অন্যকে করতে বলো না!" - মুহাম্মদ (স.)


আল্লাহর কাছে আশ্রয় চেয়ে আমি কিছু উপায় বলছি। 


১. " আমি পুরুষের জন্য নারীর চেয়ে বড় কোন ফিতনা রেখে যাচ্ছিনা!" - বুখারী, মুসলিম


আল্লাহ যদি আপনাকে বিয়ের আগে-পরের যেকোন অবৈধ সম্পর্ক থেকে বের হওয়ার সুযোগ করে দেন, সু্যোগটাকে কাজে লাগিয়ে চট করে সরে পড়ুন। সিজদায় পড়ে থাকুন কারণ পৃথিবীর অতি কতিপয় সৌভাগ্যবান মানুষদের মধ্যে আপনি একজন। চোখের পানি ছেড়ে তওবা করুন, মাফ চান আল্লাহর কাছে। আর কোন অবৈধ সম্পর্কে জীবনেও পা দিয়েন না। ভুল করে/শয়তানের কুমন্ত্রনায় আপনার সেই অবৈধ প্রেমিকাকে ইসলাম-পর্দা এসবের দাওয়াত দিতে যাইয়েন না। লাভ নাই আর সে আপনার গায়র-মারহাম, তাই এটা আপনার দায়িত্বের মধ্যেও পড়ে না। আর যদি ভাবেন আপনি দ্বীনদার হয়েছেন, এখন আগের প্রেমিকাকে বিয়ে করে তাকে পর্দা করাবেন। তাহলে শুনুন ভাই আপনাকে খুশি করতে সে জীবনেও বোরখা-হিজাব-নেকাব ধরবে নাহ, আগের মতই বেপর্দা, ফ্রি মিক্সিং এসব অভ্যাস মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে।  তাই এগুলা পাগলের কল্পনা।  হিদায়াত আল্লাহর কাছ থেকে চেয়ে নেওয়ার জিনিস। আর হিদায়াতের অভিনয়টা বেশিদিন করা যায় না।


২. ফ্রি মিক্সিং পুরোপুরি এড়িয়ে চলুন। ছেলে-মেয়ে একসাথে আড্ডা, ট্যুর এগুলো এড়িয়ে চলুন।  সকল মেয়ের নাম্বার ডিলেট করুন। অর্থাৎ বিয়ের বাইরে যত্তপ্রকার নারীসঙ্গ আছে সব ত্যাগ করুন। যত্ত হেল্প লাগে তা ভাইদের থেকে চেয়ে নিন। দ্বীনদার, আল্লাহর কথা বলে এমন ভাইদের সাথে মিশুন, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে সহায়ক হবে।  


৩. যে কান দিয়ে মিউজিক শুনা হয় সে কান দিয়ে কোরআন শুনতে ভালো লাগবে? যে মুখ দিয়ে মিউজিক গুনগুন করা হয় সে মুখ দিয়ে কোরআন পড়তে ভালো লাগবে? যে চোখ দিয়ে যিনা করা হয় সেই চোখ দিয়ে আল্লাহর জন্য চোখের পানি পড়বে? যার মন-মগজে সারাদিন অশ্লীল দৃশ্য ঘুরপাক খায় সে কখনো কাওকে আল্লাহর পথে ডাকতে পারবে? 


৪. একটা শক্ত সিদ্ধান্ত নিন। নিজের সাথে নিজে লড়াই করুন৷ সকল প্রকার মুভি-মিউজিক-নাটক-সিরিজ-টিভি-অশ্লীল দৃশ্য-গেইম এগুলো ত্যাগ করুন। সময় কাটবে কিভাবে তাহলে? বলছি পড়তে থাকুন। 


৫. নিজেকে ঢেলে নতুন করে সাজান৷ একজন দ্বীনদার পুরুষ হওয়ার চেষ্টা করুন। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামআতে পড়ার চেষ্টা করুন। আল-কোরআন বোঝার জন্য তাফসীর পড়া জরুরি। বিষয়ভিত্তিক ইসলামিক বইগুলো কিনে পড়ুন। অবসর সময় কাটাতে চাইলে হুমায়ুন জাফর ইকবালদের উপন্যাস পড়া, মুভি মিউজিক নাটক সিরিজ দেখা বাদ দিন। এগুলো আপনাকে ব্যাটার মুসলিম বানাবে না।  ইসলামিক গল্পের বইগুলো পড়ুন। রকমারি, ওয়াফিলাইফ, পর্দা - Online Shop-এ ঢুকলে লিস্ট পেয়ে যাবেন। আরিফ আজাদ, রৌদ্রময়ী-টিম সহ অনেকে সুন্দর সুন্দর ইসলামিক গল্প-উপন্যাস লিখে। অবসর সময়ে পড়তে পারেন।


৬. জানেন ভাই, এই ছোট্ট সময়কে কাজে লাগানোর সবচেয়ে ভালো উপায় কি? নিজে দ্বীনদার হওয়া এবং দ্বীনদার স্ত্রী পাওয়া। দেখবেন আপনার পরিশ্রম অনেক কমে যাবে। আপনি দেখবেন আপনার স্ত্রী পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ছে, তাফসীর পড়ছে, পরিপূর্ণ পর্দা করছে, ইসলামি বই পড়ছে এবং আপনাকে পাশে বসিয়ে শুনাচ্ছে, মুভি-মিউজিক-নাটক-ফ্রিমিক্সিং এগুলোকে ঘৃণা করছে, ঘরে প্রতিদিন কোরআন-হাদীস তালিম হচ্ছে, আপনার সন্তানরাও পরিপূর্ণ ইসলামী জীবনব্যবস্থায় গড়ে উঠছে তখন দুনিয়ায় থেকে জান্নাতের স্বাদ পাওয়া যাবে ইন শা আল্লাহ। 


৭. হারাম ইনকাম সোর্স থাকলে এক্ষুনি ত্যাগ করুন। হারাম ইনকাম করলে কোন ইবাদাত-দুআ কবুল হয় না।


৮. "তার চেয়ে আর কার কথা উত্তম হতে পারে যে মানুষকে ডাকে আল্লাহর পথে আর বলে নিশ্চয়ই আমি মুসলমানদের অন্তর্ভুক্ত!"- (সূরা আল হামিম, সাজদা আয়াত নং ৩৩) 


মুসলিম মাত্রই দ্বীনের প্রচারক। এই দায়িত্ব থেকে পালানোর সুযোগ নেই। না হয় হিসাব দিতে হবে। আন্তরিকতা-সৎ উপদেশ

Post a Comment

0 Comments