১০টি কারণে কালেমা ভঙ্গ হয় লাইলাহা ইল্লাল্লাহ কেটে যায়
°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
নিম্নে সংক্ষেপে এগুলো উল্লেখ করছি,
যেন তার থেকে নিরাপদ থাকা ও অন্যকে নিরাপদ রাখা সম্ভব হয়।
👉প্রথম কারণ: ইবাদতের ক্ষেত্রে আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করা ঈমান ভঙ্গের কারণ।
যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَغۡفِرُ أَن يُشۡرَكَ بِهِۦ وَيَغۡفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَن يَشَآءُۚ ١١٦﴾ [النساء : ١١٦]
“নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমা করেন না তার সাথে শরীক করাকে এবং এ ছাড়া যাকে চান ক্ষমা করেন”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১১৬]
অপর আয়াতে তিনি বলেন,
﴿إِنَّهُۥ مَن يُشۡرِكۡ بِٱللَّهِ فَقَدۡ حَرَّمَ ٱللَّهُ عَلَيۡهِ ٱلۡجَنَّةَ وَمَأۡوَىٰهُ ٱلنَّارُۖ وَمَا لِلظَّٰلِمِينَ مِنۡ أَنصَارٖ ٧٢﴾ [المائدة: ٧٢]
“নিশ্চয় যে আল্লাহর সাথে শরীক করে, তার ওপর অবশ্যই আল্লাহ জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন এবং তার ঠিকানা আগুন। আর যালিমদের কোনো সাহায্যকারী নেই”। [সূরা আল-মায়েদা, আয়াত: ৭২]
কয়েকটি শির্কী ইবাদাত :
মৃতদের নিকট দো‘আ করা,
তাদের নিকট ফরিয়াদ করা,
কিছু তলব করা
এবং তাদের জন্য মান্নত ও জবেহ করা ইত্যাদি।
👉দ্বিতীয় কারণ: আল্লাহ ও বান্দার মাঝে মধ্যস্থতাকারী নির্ধারণ করা, তাদেরকে আহ্বান করা, তাদের নিকট সুপারিশ তলব করা ও তাদের ওপর তাওয়াক্কুল করা ঈমান ভঙ্গের কারণ।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَيَعۡبُدُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ مَا لَا يَضُرُّهُمۡ وَلَا يَنفَعُهُمۡ وَيَقُولُونَ هَٰٓؤُلَآءِ شُفَعَٰٓؤُنَا عِندَ ٱللَّهِۚ قُلۡ أَتُنَبُِّٔونَ ٱللَّهَ بِمَا لَا يَعۡلَمُ فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَلَا فِي ٱلۡأَرۡضِۚ سُبۡحَٰنَهُۥ وَتَعَٰلَىٰ عَمَّا يُشۡرِكُونَ ١٨﴾ [يونس : ١٨]
“আর তারা আল্লাহ ছাড়া এমন কিছুর ইবাদাত করছে, যা তাদের ক্ষতি করতে পারে না এবং উপকারও করতে পারে না। আর তারা বলে, ‘এরা আল্লাহর নিকট আমাদের সুপারিশকারী’। আপনি বলুন, ‘তোমরা কি আল্লাহকে আসমানসমূহ ও জমিনে থাকা এমন বিষয়ে সংবাদ দিচ্ছ, যা তিনি অবগত নন’? তিনি পবিত্র এবং তারা যা শরীক করে, তা থেকে তিনি অনেক ঊর্ধ্বে”। [সূরা ইউনুস, আয়াত: ১৮]
👉তৃতীয় কারণ: মুশরিকদের কাফির না বলা ও তাদের কুফুরী সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করা ঈমান ভঙ্গের কারণ।
👉চতুর্থ কারণ: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ অপেক্ষা অন্য কারো আদর্শকে পরিপূর্ণ বলে বিশ্বাস করা অথবা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ফয়সালা থেকে অন্য কারো ফয়সালা উত্তম জানা ঈমান ভঙ্গের কারণ, যারা তাগুতের ফয়সালাকে প্রাধান্য দেয় তারা এ শ্রেণিভুক্ত।
👉পঞ্চম কারণ: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনিত দীনের কোনো বিধানকে অপছন্দ করা ঈমান ভঙ্গের কারণ, যদিও সে তার ওপর আমল করে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمۡ كَرِهُواْ مَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ فَأَحۡبَطَ أَعۡمَٰلَهُمۡ ٩﴾ [محمد : ٩]
“তা এ জন্য যে, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তারা তা অপছন্দ করে, অতএব তিনি তাদের আমলসমূহ বিনষ্ট করে দিয়েছেন”। [সূরা মুহাম্মাদ, আয়াত: ৯]
👉ষষ্ঠ কারণ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনিত দীনের কোনো বিধান অথবা তাতে প্রমাণিত সাওয়াব বা শাস্তি নিয়ে ব্যঙ্গ করা ঈমান ভঙ্গের কারণ।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَلَئِن سَأَلۡتَهُمۡ لَيَقُولُنَّ إِنَّمَا كُنَّا نَخُوضُ وَنَلۡعَبُۚ قُلۡ أَبِٱللَّهِ وَءَايَٰتِهِۦ وَرَسُولِهِۦ كُنتُمۡ تَسۡتَهۡزِءُونَ ٦٥ لَا تَعۡتَذِرُواْ قَدۡ كَفَرۡتُم بَعۡدَ إِيمَٰنِكُمۡۚ ٦٦﴾ [التوبة : 66]
“আর যদি তুমি তাদেরকে প্রশ্ন কর, অবশ্যই তারা বলবে, ‘আমরা আলাপচারিতা ও খেল-তামাশা করছিলাম। আপনি বলুন, ‘আল্লাহ, তার আয়াতসমূহ ও তার রাসূলের সাথে কি তোমরা বিদ্রূপ করছিলে? তোমরা ওজর পেশ করো না, তোমরা তোমাদের ঈমানের পর অবশ্যই কুফুরী করেছ”। [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ৬৫-৬৬]
👉সপ্তম কারণ: জাদু ও জাদুর অন্তর্ভুক্ত সারফ (আাকর্ষণ কিংবা বিকর্ষণ) ও ‘আতফ ঈমান ভঙ্গের কারণ। যে জাদু করে বা জাদুর প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করে সে কাফির।
কারণ, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَمَا يُعَلِّمَانِ مِنۡ أَحَدٍ حَتَّىٰ يَقُولَآ إِنَّمَا نَحۡنُ فِتۡنَةٞ فَلَا تَكۡفُرۡۖ ١٠٢﴾ [البقرة: ١٠٢]
“আর তারা কাউকে শেখাত না যে পর্যন্ত না বলত যে, ‘আমরা তো পরীক্ষা। সুতরাং তোমরা কুফুরী কর না”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১০২]
👉অষ্টম কারণ: মুশরিকদের পক্ষ গ্রহণ করা ও মুসলিমদের বিপক্ষে তাদেরকে সাহায্য করা ঈমান ভঙ্গের কারণ।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ وَمَن يَتَوَلَّهُم مِّنكُمۡ فَإِنَّهُۥ مِنۡهُمۡۗ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَهۡدِي ٱلۡقَوۡمَ ٱلظَّٰلِمِينَ ٥١ ﴾ [المائدة: ٥١]
“যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে নিশ্চয় তাদের একজন। নিশ্চয় আল্লাহ যালিম কাওমকে হিদায়াত দেন না”। [সূরা আল-মায়েদা, আয়াত: ৫১]
👉নবম কারণ: মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দীন পালন না করার অবকাশ কতক মানুষের রয়েছে বিশ্বাস করা ঈমান ভঙ্গের কারণ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَمَن يَبۡتَغِ غَيۡرَ ٱلۡإِسۡلَٰمِ دِينٗا فَلَن يُقۡبَلَ مِنۡهُ وَهُوَ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ مِنَ ٱلۡخَٰسِرِينَ ٨٥﴾ [ال عمران: ٨٥]
“আর যে ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো দীন চায় তার কাছ থেকে তা কখনো গ্রহণ করা হবে না এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৮৫]
[ইসলামের ভিতর যে সমস্ত পীরতন্ত্র , সুফিবাদ , বিভিন্ন দরবার শরীফ ,বিভিন্ন তরিকার ও বিভিন্ন মাজহাবের , গোঁড়ামি রয়েছে এগুলো প্রকৃত ইসলাম নয় ]
👉দশম কারণ: আল্লাহর দীন থেকে বিমুখ থাকা কুফুরী, ঈমান ভঙ্গের কারণ।
যে আল্লাহর দীন শিখে না ও তার ওপর আমল করে না সে কাফির।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَمَنۡ أَظۡلَمُ مِمَّن ذُكِّرَ بَِٔايَٰتِ رَبِّهِۦ ثُمَّ أَعۡرَضَ عَنۡهَآۚ إِنَّا مِنَ ٱلۡمُجۡرِمِينَ مُنتَقِمُونَ ٢٢﴾ [السجدة : ٢٢]
“আর তার চেয়ে বড় যালিম কে, যাকে স্বীয় রবের আয়াতসমূহের মাধ্যমে উপদেশ দেওয়ার পর তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। নিশ্চয় আমরা অপরাধীদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণকারী”। [সূরা আস-সাজদাহ, আয়াত: ২২]
এ দশটি বিষয় লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ, অর্থাৎ তাওহীদের কালেমা ভঙ্গকারী।
যে কেউ এ দশটি থেকে কোনো একটিতে পতিত হল তার ঈমান শেষ।
এরূপ ব্যক্তি লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ দ্বারা উপকৃত হবে না।
0 Comments