আল্লাহর সাথে কত বাহানা খুজি! How many excuses to find with God!

 

আল্লাহর সাথে কত বাহানা খুজি

How many excuses to find with God!


এক. 

আসরের জামাতের বাকি আছে ১১ মিনিট,একদিকে জামাতের সময় ঘনিয়ে আসছে অপরদিকে বৃষ্টির মাত্রা বেড়েই চলছে,হাদীস মতে সময় মত নামাজ পড়া হলো আল্লাহর কাছে প্রিয় ইবাদত , ইবনে মাসউদের বর্ননা,

 

  سَأَلْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَىُّ الْعَمَلِ أَحَبُّ إِلَى اللَّهِ قَالَ ‏"‏ الصَّلاَةُ عَلَى وَقْتِهَا

 আমি আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে জিজ্ঞেস করলাম, কোন আমল আল্লাহ্‌র নিকট অধিক প্রিয়? তিনি বললেন, ‘যথা সময়ে সালাত আদায় করা।  

সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫২৭


দুই, 

হঠাৎ মাথায় আসলো এত বৃষ্টি দিয়ে নামাজে না যাওয়ার তো অপশন আছে, 

مُسَدَّدٌ قَالَ أَخْبَرَنَا يَحْيَى عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ حَدَّثَنِي نَافِعٌ قَالَ أَذَّنَ ابْنُ عُمَرَ فِي لَيْلَةٍ بَارِدَةٍ بِضَجْنَانَ ثُمَّ قَالَ صَلُّوا فِي رِحَالِكُمْ فَأَخْبَرَنَا أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَأْمُرُ مُؤَذِّنًا يُؤَذِّنُ ثُمَّ يَقُولُ عَلَى إِثْرِهِ أَلاَ صَلُّوا فِي الرِّحَالِ فِي اللَّيْلَةِ الْبَارِدَةِ أَوْ الْمَطِيرَةِ فِي السَّفَرِ.


নাফি’ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, প্রচণ্ড এক শীতের রাতে ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) যাজনান নামক স্থানে আযান দিলেন। অতঃপর তিনি ঘোষণা করলেনঃ তোমরা আবাস স্থলেই সালাত আদায় করে নাও। পরে তিনি আমাদের জানালেন যে, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সফরের অবস্থায় বৃষ্টি অথবা তীব্র শীতের রাতে মুয়াজ্জিনকে আযান দিতে বললেন এবং সাথে সাথে এ কথাও ঘোষণা করতে বললেন যে, তোমরা নিজ বাসস্থলে সালাত আদায় করো। 

সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬৩২


তিন, 

থোর!এটাতো সফর অবস্থার বর্ননা, 

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তো অন্ধ সাহাবাকেও জামাতে আসতে বলেছেন,

 

 أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ أَعْمَى، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، لَيسَ لِي قَائِدٌ يَقُودُنِي إِلَى الْمَسْجِدِ، فَسَأَلَ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم أَنْ يُرَخِّصَ لَهُ فَيُصَلِّي فِي بَيْتِهِ، فَرَخَّصَ لَهُ، فَلَّمَا وَلَّى دَعَاهُ، فَقَالَ لَهُ: «هَلْ تَسْمَعُ النِّدَاءَ بِالصَّلاَةِ ؟» قَالَ: نَعَمْ . قَالَ: «فَأَجِبْ». رواه مُسلِم


উক্ত রাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

একটি অন্ধ লোক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট এসে নিবেদন করল, ‘হে আল্লাহর রসূল ! আমার কোন পরিচালক নেই, যে আমাকে মসজিদ পর্যন্ত নিয়ে যাবে ।’ সুতরাং সে নিজ বাড়িতে নামায পড়ার জন্য আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট অনুমতি চাইল । তিনি তাকে অনুমতি দিলেন । কিন্তু যখন সে পিঠ ঘুরিয়ে রওনা দিল, তখন তিনি তাকে ডেকে বললেন, “তুমি কি আহ্বান (আযান) শুনতে পাও ?” সে বলল, ‘জী হ্যাঁ ।’ তিনি বললেন, “তাহলে তুমি সাড়া দাও ।” (অর্থাৎ মসজিদেই এসে নামায পড় ।)

রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ১০৭৩


এটাও চিন্তা করলাম যে তখনতো ওজর ছিল!

এখন তো ছাতা আছে, ছোট বড় সব ধরনের ছাতা আছে,,,,, 


চার, 

আচ্ছা! আমার সন্তান যদি অসুস্থ হতো তাহলে কি এতো বাহানা খুঁজতে যেতাম!? 

যদি কমিউনিটি সেন্টারে যেতে হতো তাহলে এত চিন্তাভাবনা করতাম!? 

নাহ,,,,,,,, তাহলে? 

বাহানা, মাসআলা শুধু নামাজের সময় খুজি!? 

এইতো আমি মুসলমান!!!!!!! 

নামাজে না যাওয়ার জন্য যে আরো কত হাদীস এই সময় মাথায় এসেছে আল্লাহ!


পাচ. 

অবশেষে ছাতা নিয়ে বাহির হলাম, মসজিদে গেলাম, এক রাকাত ছুটে গিয়েছে,,,, আহহা! অনেকেই চার রাকাত ই আদায় করেছেন, তারা আমার চেয়ে ভালো মুসলমান, আমি এতক্ষণ মাসআলা আর বাহানা খুঁজতে ছিলাম ! কিন্ত তারা ঠিকই আমার আগে মসজিদে এসেছেন। 

আল্লাহ কতটা মায়া করে কুরআন ও সুন্নাহ পড়ার তাওফিক দিয়েছেন, অথচ তার সাথেই শুধু বাহানা খুজি! 


যাক তিন রাকাত তো পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ! 

তাও আবার আসরের নামাজ, 


عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ

‏ الَّذِي تَفُوتُهُ صَلاَةُ الْعَصْرِ كَأَنَّمَا وُتِرَ أَهْلَهُ وَمَالَهُ ‏

‘আবদুল্লাহ্‌ ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যদি কোন ব্যক্তির ‘আসরের সালাত ছুটে যায়, তাহলে যেন তার পরিবার-পরিজন ও মাল-সম্পদ সব কিছুই ধ্বংস হয়ে গেল। 

সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫৫২


 عَنْ أَبِي الْمَلِيحِ، قَالَ كُنَّا مَعَ بُرَيْدَةَ فِي غَزْوَةٍ فِي يَوْمٍ ذِي غَيْمٍ فَقَالَ بَكِّرُوا بِصَلاَةِ الْعَصْرِ فَإِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ مَنْ تَرَكَ صَلاَةَ الْعَصْرِ فَقَدْ حَبِطَ عَمَلُهُ ‏

আবূ মালীহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, এক যুদ্ধে আমরা বুরাইদা (রাঃ) এর সঙ্গে ছিলাম। দিনটি ছিলো মেঘলা। তাই বুরাইদাহ (রাঃ) বলেন, শীঘ্র ‘আসরের সালাত আদায় করে নাও। কারণ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ‘আসরের সালাত ছেড়ে দেয় তার ‘আমাল বিনষ্ট হয়ে যায়।

সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫৫৩


লেখার উদ্দেশ্য, 

নামাজের গুরুত্ব তুলে ধরা, 

জামাতের গুরুত্ব বুঝানো, 

উদ্ধুদ্ধ করা, 

উৎসাহিত করা, 

আল্লাহর কাজে এতো বাহানা খুজতে যাবনা।

Post a Comment

0 Comments